২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
প্রকাশিত:শনিবার, ০৫ জুলা ২০২৫ ০৯:০৭
নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ:- হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০-২৫টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দু’জন। শুক্রবার (৪ জুলাই) রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শহরের মধ্যবাজার, শেরপুর রোড ও হাসপাতাল সড়কে এ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিমিরপুর গ্রামের খরচু মিয়ার সাথে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মনসুরপুর গ্রামের আশাহিদ আলী আশার বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরবর্তীতে আশাহিদের পক্ষ নিয়ে আনমনু গ্রামের রাশেদ আহমদ, নাবেদ মিয়া, কাজল, বাদল ও নাহিদসহ একদল যুবক খরচু মিয়া ও তার অনুসারীদের ওপর হামলা চালায়। তারা তিমিরপুর গ্রামের দুই কিশোরকে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। ঘটনাটি দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সেলিম তালুকদারের নেতৃত্বে তিমিরপুর গ্রামের লোকজন বাজারে এসে প্রতিরোধে নামে পাল্টা হামলা চালালে প্রতিক্রিয়ায় আনমনু গ্রামের যুবকেরাও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও বানিয়াচং সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ উদ্ধার করে হেফাজতে নেয় মারধরের শিকার হওয়া দুই কিশোরকে।
ঘটনার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়া, জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মো. শাহজাহান আলী, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরফরাজ আহমদ চৌধুরীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উভয় পক্ষকে ধৈর্য্য ধারণ করে আপোষে মীমাংসা করার আহবান জানান।
বৃহস্পতিবার রাতেই উভয় পক্ষ গ্রামে গ্রামে সভার ঘোষণা দেয়। শুক্রবার সকালে মো. শাহজাহান আলী নবীগঞ্জ শহরে আসেন এবং আনমনু গ্রামে এক পরামর্শ সভায় শালিসের আহ্বান জানান। একইদিন থানার গোলঘরেও আশাহিদ আলী আশা ও খরচু মিয়ার উপস্থিতিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মো. শাহজাহান আলী, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরফরাজ আহমদ চৌধুরীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এদিন এশার নামাজের পর তিমিরপুর ও আশপাশের গ্রামের মানুষ নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেন প্লাজায় পূর্বনির্ধারিত এক সভায় বসেন।
এতে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মো. শাহজাহান আলীও আপোষ মীমাংসার উদ্যোগের বিষয়টি জানাতে উপস্থিত হন। এ সময় খবর ছড়ায় যে আনমনু গ্রামের শতাধিক যুবক শেরপুর রোডে অবস্থান নিয়েছে। এতে উত্তেজিত হয়ে তিমিরপুরের যুবকরা আবারও ধাওয়া দেওয়ার চেষ্টা করে এবং নতুন করে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে আনমনু গ্রামের পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে শত শত লোকজনকে অস্ত্রসহ শহরে আসার আহ্বান জানানো হয়। একপর্যায়ে তারা শহরে ঢুকে গোল্ডেন প্লাজা ও হাসপাতাল সড়কে দোকানপাটে ইটপাটকেল ছোড়ে এবং ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। সংঘর্ষের সময় মধ্যবাজারের গোল্ডেন প্লাজা ও হাসপাতাল সড়কের এসএম মার্কেটসহ অন্তত ২০-২৫টি দোকানে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহত হন অন্তত দু’জন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নবীগঞ্জ শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল অব্যাহত রয়েছে। নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান জানান- বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
Helpline - +88 01719305766