বহিষ্কার ঠেকাতে অন্যের নামে অপপ্রচার করেছিলো আলোচিত মিজান!

প্রকাশিত:শুক্রবার, ০৪ জুলা ২০২৫ ১০:০৭

বহিষ্কার ঠেকাতে অন্যের নামে অপপ্রচার করেছিলো  আলোচিত মিজান!

সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকার একটি কোলোনীতে বুধবার সন্ধ্যায় একদল দুর্বৃত্ত শারীরিক নির্যাতন করেছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অভিযোগ করেছেন সিলেট বিমানবন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক এমদাদুল ইসলাম মিজান। তাকে ছিনতাইকারী সাজিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।

এ অবস্থায় বিষয়টি তদন্ত করছে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল। এ ব্যাপারে খুব তাড়াতাড়ি একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছে দলটির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র। তবে ঘটনাস্থলে স্থানীয় একটি সূত্র বলছে অন্য কথা। মিজান মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নিজের দোষ আড়াল করতে অন্যদের ফাঁসাতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান প্রকৃত ঘটনা : বুধবার আম্বরখানা এলাকায় সান্না নামের এক ছিনতাইকারিকে আটক করে স্থানীয় জনতা। তাকে ছাড়াতে সেখানে যান সিলেট বিমানবন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক এমদাদুল ইসলাম মিজান। তার উপস্থিতিতে সান্না সেখান থেকে পালিয়ে যায়। উত্তেজিত জনতা এই সময়ে তাকেও গডফাদার আখ্যা দিয়ে আটক করে এবং গণধোলাই দেয়। পরে তিনি ছাত্রদলের ইসতিয়াক আহমদ রাজুকে কল করে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করার জন্য বলেন। খবর পেয়ে রাজু সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। অবশ্য রাজু সেখানে যাবার আগে উত্তেজিত জনতা মিজানকে নির্যাতন করে এবং ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এই ঘটনার পর মধ্যরাতে হাসপাতাল থেকে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি লাইভ করেন তিনি। তিনি লাইভে বলেন অন্য কথা। তিনি লাইভে এসে বলেন এই ছাত্রদলের রাজু তাকে মেরেছে। তাকে ছিনতাই কারি সাজিয়েছে এবং মিশিগান বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুরুল করিম তুহিনের নির্দেশে এই ঘটনা ঘটিয়েছে ওরা। তিনি লাইভে বলেন, তাকে নির্যাতনের সময়ে রাজুর লাইভে ছিলেন মনজুরুল করিম তুহিন।

বিষয়টি খুবই দু:খজনক বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের ইসতিয়াক আহমদ রাজু । তিনি বলেন, একটি ঘটনায় তাকে স্থানীয় জনতা আটক করে। মিজান আমাকে কল করে তাকে উদ্ধার করার জন্য বলেন। আমি সেখানে যাই গিয়ে তাকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। পরে রাতে কার ইাশারায় একটি লাইভ করে আমাকেসহ অন্যান্যদের সে জড়ায়। আমি উপকার করে তিরস্কার পেয়েছি। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।

মিশিগান বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুরুল করিম তুহিনও এ ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করে বলেন, মিজান ছেলেটা আমাদের এলাকার। আমি তাকে অনেক স্নেহ করি। ওরসব আপদে-বিপদে আমি যতটুকু সম্ভব সহযোগীতা করি। ওর উপর নির্যাতন হয়েছে কি কারনে আমি জানি না। তবে ওর একটি লাইভতে ভিডিও আমার নাম জড়িয়ে প্রচার করা হয়েছে। আমি ভালো করে জানি, সে এই কাজ ইচ্ছে করে করেনি। আমার ইমেজ নষ্ট করার জন্য তাকে কেউ দিয়ে মধ্যরাতে লাইভ ভিডিও করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিষয়টি জানেন না সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মো. আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, এরকম ঘটনায় কোনো অভিযোগ আসেনি।

এদিকে, মিজানের এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এই ভিডিওর কমেন্ট বক্সে সিব্বির আহমদ নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করে মিজান সম্পর্কে।

পোস্টে বলা হয়, মিজান কিছুদিন আগে বাদামবাগিচা এলাকায় তীর শীলং জোয়ার বোর্ড বসিয়েছিল। আমরাসহ এলাকার যুব সমাজরা মিলে এটার প্রতিবাদ জানাই। বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকেও অবগত করি। এই বিষয়ের সূত্র ধরে মিজান ও তার সহযোগীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এই হামলায় ওর বুকের বাম পাশে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। হাতের রগ কেটে দেয়।

চিকিৎসা শেষে সে বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ মিজানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেইনি পুলিশ প্রশাসন। সে আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেয় মামলার আরজি তুলে নেয়ার জন্য। মামলা কিভাবে রেকর্ড হয় সে দেখে নিবে! সিব্বির মিজানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।

এসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত হোক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি নেটিজনদের।

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অপরাধে মিজান কে বহিষ্কার করেছে স্বেচ্ছাসেবকদল।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ