জগদলে ৮ কোটি টাকার সেতু নির্মাণের আগেই ভেঙ্গে পড়লো গার্ডার

প্রকাশিত:সোমবার, ০৮ জুলা ২০২৪ ১২:০৭

জগদলে ৮ কোটি টাকার সেতু নির্মাণের আগেই ভেঙ্গে পড়লো গার্ডার

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল কলেজের পাশে হেরা চেপটা (মরা) নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রিজের ৩২ মিটারের দুইটি গার্ডার (বেষ্টক) ভেঙ্গে পড়েছে। গার্ডার দুটি ভেঙ্গে পড়ার সময় বিকট শব্দে এলাকা কেঁপে ওঠে। গত বুধবার গার্ডার ভাঙ্গার ঘটনা ঘটে।

দিরাই উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্য মতে, ৯৬ মিটার দীর্ঘ এই ব্রিজটি এপ্রোচসহ সাড়ে ৮ কোটি কোটি ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। ২০২২ সালের ১ জুন ব্রিজের কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের ২৫ জুন ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা ছিল। কিন্তু, এখনো শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিজের নিচের অংশের কাজ শেষে এখন দুই পাশের গার্ডারের কাজ চলছিল। কোম্পানির সাইট ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম জানান, গার্ডার নির্মাণের পর জগ দিয়ে গার্ডার দুটি প্রতিস্থাপনের সময় দুর্ঘটনা বশত গার্ডার দুইটি নিচে পড়ে গেছে। তবে, এতে কোন শ্রমিক হতাহত হয়নি। এ কারণে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকার।

উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, গার্ডারটি বসানোর সময় দুর্ঘটনা বসত নিচে পড়ে গিয়ে ভেঙ্গে গেছে। এর দায়ভার অবশ্যই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে।

জানা গেছে, ব্রিজটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম সালেহ কামার জানি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সালেহ আহমদ মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা। রাজনীতির সাথেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। সারাদেশে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ২শ’ কোটি টাকার এবং সুনামগঞ্জে ১২৫ কোটি টাকার কাজ রয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

ঠিকাদারের ভাগ্নে ও প্রতিষ্ঠানটির সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর ও টাঙ্গাইলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ইসমাইল জানিয়েছেন, এ কাজের জন্য ১ কোটি টাকা বিল তোলা হয়েছে।

সূত্র মতে, সুনামগঞ্জ এলজিইডি’র বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বাড়িও একই এলাকায়। তারা একে অপরের নিকটাত্মীয়। যে কারণে জেলার কেউই তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন ঠিকাদার বলেন, এ কাজে অবশ্যই অনিয়ম হয়েছে।

আলাপকালে স্থানীয় বাসিন্দারা সিলেটের ডাককে জানান, গার্ডার নির্মাণ কাজে নিম্নমানের বালু, পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্মাণ কাজে স্থানীয় প্রকৌশলীদের তদারকির অভাব রয়েছে। যে কারণে গার্ডারটি লুজ হয়ে ভেঙ্গে পড়ে। অন্য একটি সূত্র জানায়, উপজেলা প্রকৌশলীও ১৪ বছর ধরে দিরাইয়ে দায়িত্বে রয়েছে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সূত্র-সিলেটের ডাক

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ