যুক্তরাজ্যের নির্বাচন আজ : শেষ হাসি হাসবেন কে?

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলা ২০২৪ ১০:০৭

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন আজ : শেষ হাসি হাসবেন কে?

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই)। ধারণা করা হচ্ছে, ভোটের ফল আগামী শুক্রবার (৫ জুলাই) প্রথম ভাগ নাগাদ আসতে পারে। যদিও আজ রাতেই ফলাফল স্পষ্ট হতে শুরু করবে। সর্বশেষ জনমত জরিপ বলছে, শেষ হাসি হয়তো হাসবেন লেবার পার্টির নেতা স্যার কির স্টারমার।

নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচন করার ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। নিয়মমাফিক ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সুনাকের ঘোষণার সময় জনমত জরিপে লেবার পার্টি ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে ছিল। অন্যদিকে সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টি ছিল ২৩ শতাংশের ঘরে। দুই দলের ক্ষেত্রেই পরিবর্তন এসেছে। এখন লেবার পার্টি রয়েছে ৪০ দশমিক ৭ শতাংশে। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি রয়েছে ২০ দশমিক ৭ শতাংশে।

যুক্তরাজ্যের এবারের নির্বাচনে প্রায় ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। ভোট শুরু হবে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে। চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। যুক্তরাজ্যজুড়ে ৬৫০টি নির্বাচনি এলাকায় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসের জন্য প্রার্থী নির্বাচিত হবেন।

খবরের কাগজ

বিশ্বগ্রাম
যুক্তরাজ্যের নির্বাচন আজ : শেষ হাসি হাসবেন কে?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩০ এএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩০ এএম
sharethis sharing button
যুক্তরাজ্যের নির্বাচন আজ : শেষ হাসি হাসবেন কে?
ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যের নির্বাচন আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই)। ধারণা করা হচ্ছে, ভোটের ফল আগামী শুক্রবার (৫ জুলাই) প্রথম ভাগ নাগাদ আসতে পারে। যদিও আজ রাতেই ফলাফল স্পষ্ট হতে শুরু করবে। সর্বশেষ জনমত জরিপ বলছে, শেষ হাসি হয়তো হাসবেন লেবার পার্টির নেতা স্যার কির স্টারমার।

নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচন করার ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। নিয়মমাফিক ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সুনাকের ঘোষণার সময় জনমত জরিপে লেবার পার্টি ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে ছিল। অন্যদিকে সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টি ছিল ২৩ শতাংশের ঘরে। দুই দলের ক্ষেত্রেই পরিবর্তন এসেছে। এখন লেবার পার্টি রয়েছে ৪০ দশমিক ৭ শতাংশে। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি রয়েছে ২০ দশমিক ৭ শতাংশে।

যুক্তরাজ্যের এবারের নির্বাচনে প্রায় ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। ভোট শুরু হবে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে। চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। যুক্তরাজ্যজুড়ে ৬৫০টি নির্বাচনি এলাকায় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসের জন্য প্রার্থী নির্বাচিত হবেন।

খবরের কাগজের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

হাউস অব কমনসে কোনো দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য মোট আসনের অন্তত ৫০ শতাংশ বা ৩২৬টি আসনে জয়লাভ করতে হয়। এরপর তাদেরকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানান ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়, নির্বাচনের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয় না।

এবারের মেয়াদে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট মুলতবি হয় গত ৩০ মে। সে সময় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে ১৩টি দল ও ১৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির দখলে ছিল নিম্নকক্ষের ৩৪৪টি আসন। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির হাতে ছিল ২০৫টি আসন। ৪৩টি আসন ছিল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির হাতে। ১৫ আসন দখলে রেখেছিল লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা।

তবে এবারের চিত্র সম্ভবত ভিন্ন হবে। জনমত জরিপের ফল বলছে, লেবার পার্টি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। জরিপের এমন অবস্থা দেখে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এক নেতাও বলে বসেছেন, লেবার পার্টি নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে চলেছে যা আগে কোনো দল অর্জন করেনি। এ মন্তব্য করেছেন খোদ ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির কর্ম ও অবসরকালীন ভাতাবিষয়ক মন্ত্রী মেল স্ট্রাইড। তিনি বলেছেন, সব দেখে মনে হচ্ছে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল ‘অনিবার্য’ এবং জনমত জরিপ ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

এমন একটি সময়ে এ মন্তব্য এলো যখন সুনাক, স্টারমার ও অন্যরা চূড়ান্ত ধাপের নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত। তবে মেল স্ট্রাইডের মন্তব্য উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘তিনি (স্ট্রাইড) এ কথা বুঝাতে চাননি। তিনি মূলত বুঝাতে চেয়েছেন বড় মাপে লেবার বিজয় পেলে কী ঘটতে পারে, মানুষের জন্য তা কী পরিণতি বয়ে আনতে পারে- সেই কথা।’

সুনাক আরও বলেন, স্ট্রাইড প্রতিটি ভোটের জন্য লড়াই করছেন। মাত্র এক লাখ ৩০ হাজার ভোটার এ নির্বাচনে বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন। ফলে যারাই মনে করছেন সব শেষ হয়ে গেছে, তাদের বলছি- এটি শেষ হয়ে যায়নি।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, বিপুলসংখ্যক ভোটার এখনো এ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন তা মনস্থির করে উঠতে পারেননি। এই ভোটাররা নির্বাচনে অংশ নিলে ফলাফল পাল্টে যেতে পারে।

এদিকে, মেল স্ট্রাইডের বক্তব্যে খুশি হওয়ার বদলে উল্টো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন লেবার পার্টির নেতা কির স্টারমার। তার মতে, বিরোধী দলের মেল স্ট্রাইড এ মন্তব্য করেছেন ভোটার দমানোর জন্য। স্টারমার বলেন, স্ট্রাইড মানুষকে ভোট দিতে আসতে দেওয়ার বদলে ঘরে রাখার চেষ্টা করছেন।

গত ১৪ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টি। অভিবাসন, মূল্যস্ফীতি- নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাদের। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, গত নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে ভোট দিয়েছেন, এমন অনেক ভোটারও এবার দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন।

নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী

এদিকে, যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে বিভিন্ন দলের হয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৩৪ জন ব্রিটিশ নাগরিক লড়বেন বলে জানা গেছে। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আটজন ব্রিটিশ নাগরিক মনোনয়ন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে চারজন বর্তমানে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা হলেন- রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক ও আফসানা বেগম। বাদবাকি চারজন হলেন- রুমি চৌধুরী, রুফিয়া আশরাফ, নুরুল হক আলী ও নাজমুল হোসাইন।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল থেকেও ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি নাগরিকদের লড়তে দেখা যাবে। মোট ২ জন লড়বেন এ দল থেকে। তারা হলেন- আতিক রহমান ও সৈয়দ সাইদুজ্জামান।

ওয়ার্কার্স পার্টি অব ব্রিটেন থেকে লড়তে দেখা যাবে ৬ জনকে। তারা হলেন -গোলাম টিপু, প্রিন্স সাদিক চৌধুরী, মোহাম্মদ সাহেদ হোসাইন, ফয়সাল কবির, মোহাম্মদ বিলাল ও হালিমা খান।

এ ছাড়া রিফর্ম পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেখা যাবে রাজ ফরহাদকে, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস থেকে লড়বেন রাবিনা খান, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি থেকে দাঁড়িয়েছেন নাজ আনিস মিয়া, গ্রিন পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন সাইদ সিদ্দিকী, সাইদ শামসুজ্জামান শামস ও শারমিন রাহমান। আর সোশালিস্ট পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মমতাজ খানম।

নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও দাঁড়িয়েছেন ১১ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তারা হলেন- ওয়েইছ ইসলাম, আজমাল মাশরুর, সুমন আহমেদ, সাম উদ্দিন এহতেশামুল হক, ওমর ফারুক, নিজাম আলী, নূরজাহান বেগম, হাবিব রহমান, আবুল কালাম আজাদ ও রাজা মিয়া। সূত্র: গার্ডিয়ান, বিবিসি

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ