জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের ৩৬-তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সিলেটে লাল পতাকা র‌্যালি ও সমাবেশ

প্রকাশিত:সোমবার, ০৫ ফেব্রু ২০২৪ ০৬:০২

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের ৩৬-তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সিলেটে লাল পতাকা র‌্যালি ও সমাবেশ

সুরমাভিউ:-  জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ এর ৩৬-তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সোমবার বিকেল ৪টায় সুরমা পয়েন্ট থেকে এক লাল পতাকা র‌্যালি শহরের জিন্দাবাজর হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেটের ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে এসে সমাবেশ করে।

সিলেট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল-এর সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু’র পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি সুরুজ আলী, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া, শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি খোকন আহমদ, জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তুখোর আরেং, জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ শাহপরান থানা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সিলেট জেলা প্রেস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী, শ্রমজীবী সংঘ মিরেরচক কমিটির আহবায়ক আলী আহমদ সহ প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তির জাতীয় ভিত্তিক সংগ্রাম অগ্রসর করার লক্ষ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠা, প্রয়োজনীয়তা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্তমানে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।  বাংলাদেশ একটি নয়া ঔপনিবেশিক আধা সামন্তবাদী দেশ। এদেশে কখনো গনতন্ত্র ছিলো না এবং এখনো নেই। আমাদের মতো দেশে সকল কিছুর নিয়ন্ত্রক ও পরিচালক সা¤্রাজ্যবাদ। যে কারণে ক্ষমতাসীন  প্রতিটি সরকারই জাতীয় ও জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে প্রভুর স্বার্থ রক্ষা করে চলে। দেশ পরিচালিত হয় সাম্রাজ্যবাদী নীতি-নির্দেশে। নির্বাচনের ফলাফলও নির্ধারিত হয় তাদের পরিকল্পনায়। সা¤্রাজ্যবাদের সহযোগী হিসেবে দালাল শাসক-শোষকগোষ্ঠী উন্নয়নের নামে বেপরোয়া লুটপাট করে সুইস ব্যাংক সহ বিদেশের বিভিন্ন দেশে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করছে, বিদেশে বাড়িঘর করছে, জমিজমা কিনে বেগম পাড়া তৈরি করছে। ৫ দশকের বাংলাদেশে শোষণ বেড়েছে কয়েকশোগুন। জনগণের মাথায় দিনের পর দিন ঋণের বোঝা বাড়ছে। উন্নয়নের নামে বৈষম্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষা উপকরণ, গৃহস্থলির সামগ্রী, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সহ জিনিসপত্রের দাম যে হাড়ে ফুলে ফেঁপে উঠছে এতে একদিকে যেমন গুটিকয়েকের হাতে কুক্ষিগত হচ্ছে বিশাল পরিমাণ সম্পদ অন্যদিকে না খেয়ে আধ-পেটা খেয়ে বেঁচে আছে দেশের অধিকাংস মানুষ।

বিশ^ব্যাপী সা¤্রাজ্যবাদ তার অতি উৎপাদন সংকট থেকে মুক্তির পথ হিসেবে যুদ্ধকে সামনে আনছে। সা¤্রাজ্যবাদীরা পুঁজি ও শক্তি অনুপাতে বিশ্বকে ভাগ-ভাটোয়ারার তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক ও রণনীতিগত গুরুত্বের প্রেক্ষিতে এ দেশকে নিয়ে আন্ত:সা¤্রাজ্যবাদী প্রতিযোগিতা প্রতিদ্বন্ধিতা তীব্রতর হয়ে আগ্রাসী যুদ্ধে সম্পৃক্ত করার ষড়যন্ত-চক্রান্ত বেড়েই চলছে। সা¤্রাজ্যবাদী দেশগুলো মরিয়া বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। দেশে দেশে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে বিশ্বযুদ্ধের বিপদ বৃদ্ধি করছে, তার বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে বিশ্ববিপ্লব অগ্রসর করা এবং সা¤্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ ও আমলা-দালাল পুঁজির নির্মম শোষণ লুণ্ঠনে দেশের শ্রমিক কৃষক জনগণের উপর যে খড়গহস্থ নেমে এসেছে তার বিরুদ্ধে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।

প্যালেস্টাইন দখল, আগ্রাসন, গণহত্যাকান্ড আঞ্চলিক যুদ্ধ, স্থানীয় যুদ্ধ, সীমান্ত সংঘর্ষ-হত্যাকান্ড, জাতিগত নিপীড়ন, ক্ষুধা-দারিদ্র-বেকারত্বের জন্য দায়ী পুঁজিবাদী সা¤্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা। বক্তারা শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ