৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
প্রকাশিত:মঙ্গলবার, ২৬ ডিসে ২০২৩ ০৯:১২
অনিবার্য কারণেই ১৯৮০ সালে এসএসসি পাস করার পর সিলেট বা সুনামগঞ্জের কোন কলেজে ভর্তি না হয়ে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলাম ছাতক কলেজে এবং সৌভাগ্যক্রমে আমার থাকার ব্যবস্থা হয় আরজ মিয়া চৌধুরীর বাড়িতে। আমি সৌভাগ্যবান বলছি এ কারনে যে আমাকে তিনি, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানাদি পরিবারের একজন সদস্য হিসাবেই গণ্য করতেন। আরজ মিয়া চৌধুরী ছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত সৎ ব্যবসায়ী, যিনি পরবর্তীতে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সম্মাননাও পেয়েছেন। রাজনীতির আশেপাশেও তিনি ছিলেন না, তবে সন্তানদের কখনোই রাজনীতি থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেননি।
শামীম আহমেদ চৌধুরী সন্তানদের মধ্যে সপ্তম আর ছেলেদের মধ্যে পঞ্চম। ছেলেদের মধ্যে একমাত্র জামাল ছাড়া শাহজাহান ভাই, কামাল ও কালাম সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত ছিল। শাহজাহান ভাই বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী সময়ে এমসি ইন্টারমেডিয়েট কলেজের প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আমরা যখন ছাতকে ছাত্রলীগকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে সচেষ্ট হই তখন কামাল ও কালাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওরা তখন হাইস্কুলের ছাত্র। যতটুকু মনে পড়ে শামীম সম্ভবত তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। পরবর্তীতে শামীমও বড় হয়ে ভাইদের পথ অনুসরণ করে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পর্যন্ত নির্বাচিত হয়। বর্তমানে সে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আর কালাম চৌধুরীতো এবার নিয়ে তিনবার ছাতক পৌর মেয়রের দায়িত্ব পালন করছে। একটা বিষয় উল্লেখ করা অবশ্যই প্রয়োজন। শামীম চৌধুরীর চাচা সুজন মিয়া চৌধুরী বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তিনি ভাতিজাদের প্রভাবিত করতে পারেননি। তাঁরা দুর্দিনে যেমন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল এখনো আছে। আজকে শামীম চৌধুরী দলীয় সভাপতির নির্দেশিতই পথেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করছে। অতীতে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েও কিন্তু যৌক্তিক কারণেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেনি।
অন্যদিকে, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সুনামগঞ্জ-৫ আসনে যিনি পুনরায় নির্বাচন করছেন তিনি তৃণমূল আওয়ামী লীগ নন। তিনি মূলত: সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শতভাগ অনুগত শিষ্য হিসাবে ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। দাদার মতো তিনিও সৌভাগ্যবান রাজনীতিবিদ। দুর্দিনে আওয়ামী লীগ না করেও একাধিকবার সাংসদ হয়েছেন। শুনেছি তিনি এখন অনেক অসুস্থ তারপরও নির্বাচন করছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অবসর নিতে চান না। একমাত্র ব্যতিক্রম সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তিনি স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন। অপ্রিয় হলেও সত্য, বাংলাদেশের সাংসদদের মধ্যে একটা সুপ্ত বাসনা জাগ্রত। আর তাহলো সাংসদ থাকা অবস্থায় যদি মৃত্যু বরণ করেন তাহলে তার সন্তান, স্ত্রী কিংবা পরিবারের অন্য কেউ খুব সহজেই সাংসদ হয়ে যেতে পারে সিমপ্যাথির কারনে রাজনীতির সাথে সম্পর্ক থাকুক আর নাই থাকুক।
পরিশেষে যে কথাটি বলতে চাই, শামীম চৌধুরী ও মহিবুর রহমান মানিক দু’জন আওয়ামী লীগ। মহিবুর রহমান মানিক একাধিকবার এমপি হয়েছেন। শামীম চৌধুরী গতবারও বঞ্চিত হয়েছে। মানিক এবার নির্বাচন না করলেই বরং ভালো হতো। নতুনদের জন্য জায়গা ছেড়ে না দিলে পরবর্তী নেতৃত্ব গড়ে ওঠার সুযোগ কোথায়?
সুজাত মনসুর
যুক্তরাজ্য
অফিস :ইস্ট এন্ড, তালতলা ,সিলেট-৩১০০, বাংলাদেশ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এমদাদুল হক
বার্তা সম্পাদকঃ আবু জাবের
মোবাইলঃ ০১৭১১৩৩১০৭০
ইমেইলঃ surmaview24@gmail.com
Helpline - +88 01719305766