অর্থনৈতিক ফায়দা লুটতে বাড়ছে সিজার ডেলিভারি

প্রকাশিত:শনিবার, ২২ জুলা ২০২৩ ০৩:০৭

গর্ভবতী হবু মায়ের সন্তান প্রসবের লক্ষণ স্বাভাবিক হলেও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যাওয়ার পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই বাচ্চার জন্ম দেওয়া হচ্ছে সিজারিয়ান ডেলিভারি করে। এরপর বাধ্য হয়েই পরের বাচ্চা প্রসবের সময় সিজারিয়ানের পথ বেছে নিতে হয় সেই মাকে। এভাবে অমানবিক কৌশলে বড় অংকের আয়ের ছক কষা হয় প্রথম সিজারিয়ান ডেলিভারি থেকেই। কারণ নরমাল ডেলিভারির চেয়ে সিজারিয়ান ডেলিভারিতে খরচ বেশি।

এভাবে সিজারিয়ান ডেলিভারি করিয়েই প্রতি মাসে ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো কামিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা। শুধু এই খাত থেকেই ফেনীর প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর প্রতিটি মাসে গড়ে অর্ধ কোটি টাকা কামায়। এমনকি ‘কম খরচের’ হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত ছোট প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর ও প্রতি মাসে সিজারিয়ান থেকে আয় হচ্ছে গড়ে ১০ লাখ বা তারও বেশি বেশি টাকা। শহরের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালও ক্লিনিক ঘুরে এমন সব তথ্যই পাওয়া গেছে।

ফেনীতে কয়েকদিনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশেষ করে প্রথমবার যেসব গর্ভবতী মায়েরা বাচ্চা প্রসব করতে এসব হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাচ্ছেন, শুধুমাত্র টাকার লোভে ভবিষ্যতের জন্য তাদের এক বিপজ্জনক অবস্থায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রথমবার বাচ্চা প্রসব করতে যাওয়া এসব হবু মায়েদের পর্যবেক্ষণে না রেখেই নিয়ে যাওয়া হয় সিজারিয়ান অপারেশনের টেবিলে। ক্লিনিকগুলোর এই ফাঁদে পড়ে কিংবা ডাক্তারদের অবহেলায় প্রথমবার সিজারিয়ান করার ফলে দ্বিতীয় সন্তান জন্মদানের সময় বাধ্য হয়েই আগের পথে হাঁটতে হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের। আর ডাক্তারদের লক্ষ্যও থাকে এটাই এমন অভিযোগও উঠছে।

বিষয়টি ব্যাখা করে ফেনী সরকারি হাসপাতালে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গাইনি বিশেষজ্ঞ জানান, ‘প্রথমবার যখন কারও সিজারিয়ান অপারেশন করে ফেলে, তখন বাধ্য হয়েই দ্বিতীয়বার সন্তান প্রসবের সময় সিজারিয়ান করতে বাধ্য হচ্ছেন ডাক্তাররা। কারণ প্রথমবার সিজারিয়ানের পর দ্বিতীয়বার নরমাল প্রসবের চেষ্টা করতে গেলে আগের সেলাইয়ে চাপ পড়ে। কোনো কারণে প্রসব বিলম্বিত হলে মায়ের জরায়ু ও আগের সেলাই ফেটে যেতে পারে। তখন তাৎক্ষণিকভাবে অপারেশন না করলে মায়ের মৃত্যু হতে পারে। তিনি জানান, সময় নিয়ে প্রথম বাচ্চা স্বাভাবিক প্রসবেই হওয়া উচিত বলে মনে করেন এই চিকিৎসক।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ