প্রিপট্রাস্ট অপরাজিতা প্রকল্পের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩ ০৬:০৬

প্রিপট্রাস্ট অপরাজিতা প্রকল্পের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন
স্টাফ রিপোর্টার:-  প্রিপট্রাস্ট অপরাজিতা প্রকল্পের আওতায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ‍্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনের আগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ‍্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সামনে মুল সড়কের পাশে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম‍্যান নিগার সুলতানা কেয়া।
বিশেষ অতিথির বক্তব‍্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম‍্যান অ‍্যাড. আবুল হোসেন, নারী নেত্রী শরীফা আশরাফি, নারী নেত্রী মাজেদা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন তাহিরপুর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আইরিন আক্তার।
স্বাগত বক্তব‍্য রাখেন প্রিপট্রাস্ট অপরাজিতা প্রকল্পের জেলা প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী মো. ইখতেহার হোসেন মৃধা।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রিপট্রাস্টের ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মাহবুব আলম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রিপট্রাস্টের ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর লাভলী সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর নির্দেশনা অনুসারে “রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ে অনতিবিলম্বে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দাবি উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে সক্রিয় সাবেক, বর্তমান ও আগামীর সম্ভাব‍্য নারী প্রতিনিধি তথা অন্যান্য নারীনেত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত “অপরাজিতা নেটওয়ার্ক এর আয়োজনে সুনামগঞ্জ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর নির্দেশনা অনুসারে রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ে অনতিবিলম্বে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে” এই দাবিকে সামনে রেখে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দাবি উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান প্রধান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মূল কমিটিতে নারীদের অবস্থান এখনও অনেক দূর্বল। তাঁরা অতিসত্বর গুরুত্বপূর্ণ পদে বিশেষ করে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা সম্পাদকমন্ডলীর সদস‍্য হিসাবে নারীদের দেখতে চান।
বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের মত উচ্চাসনে আসীন হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছেন নারীরা। তথাপি রাজনীতির অঙ্গনে তাদেরকে প্রায়ই শুনতে হয় যে, তাদের রাজনৈতিক যোগ‍্যতা কম বলে মূল কমিটিতে আসতে আরও সময় লাগবে। এই গতানুগতিক অজুহাতের বিপরীতে আমরা চাই সকল স্তরে নারীদেরকে রাজনৈতিক দলগুলিতে ন‍্যুনতম ৩৩℅ হারে সম্পৃক্ত করার সক্রিয় উদ‍্যোগ এবং জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নারীদের ৩০ শতাংশ মনোনয়ন দেওয়ার শর্তও যুক্ত করতে হবে।
নারী প্রার্থীর মনোনয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরো সাহসী হতে হবে। তাঁরা মূলত: শুধু সংরক্ষিত আসনে আর নির্বাচন করতে চান না, সাধারণ আসনেও অনেক বেশি প্রার্থী নির্বাচন করতে চান। তাঁরা বিশ্বাস করেন এক্ষেত্রে নারীরা নির্বাচনে ভালো ফলাফল করবেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) নতুন করে সংশোধনের জন্য একটি বিল ইতোমধ্যে সংসদের চলতি অধিবেশনে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং তা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিবেচনাধীন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে যেসব সংশোধনী বিবেচনাধীন রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দল নিবন্ধনে ৩৩℅ নারী প্রতিনিধিত্বের প্রতিশ্রুত সময়সীমা ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাড়ানো।আইন প্রণেতাদের কাছে তাদের দাবি, এই নতুন সময়সীমার মধ‍্যে যেন সকল দল উক্ত লক্ষমাত্রা পূরণ করে, এ ব্যাপারে আরো সুনির্দিষ্ট আইনি বাধ্যবাধকতা প্রাণয়ন করার।
রাজনৈতিক দলের কমিটিগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে সম্মেলনের আয়োজন করা।
আগামী জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন সম্মেলনে রাজনৈতিক দলের কমিটিতে নারীর অন্তভূর্ক্তির মাত্র বৃদ্ধি করতে হবে। তারা বিশ্বাস করেন আগামী সময়সীমার আগেই সকল রাজনৈতিক দলের সকল কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ নারীকে অন্তভূক্তির ফলে প্রকৃতভাবে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন হবে।
সংবাদ সম্মেলনের আগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ‍্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সামনে মেইন সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব‍্য রাখেন তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কর, অ‍্যাড. মাহবুবুল হাছান শাহীন, জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাত মরিয়ম।
উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডের সহায়তায় বাস্তবায়িত নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্প ২০১১ সাল থেকে দেশে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষে কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সাল থেকে হেলভেটাস সুইস ইন্টারকোঅপারেশন চারটি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলাধীন ৬২টি উপজেলার ৫৪০টি ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত নারী প্রতিনিধি তথা নির্বাচনে আগ্রহী নারী নেত্রীদের দক্ষতা বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে সংলাপসহ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন সম্পূরক কর্মকাজ পরিচালনা করছে। এসব কর্মকাণ্ডের অংশ হিসাবে উল্লিখিত দাবিতে অপরাজিতা নেটওয়ার্ক এর উদ্যোগে সারা দেশের ১৬টি জেলায় একযোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ