চাকরি এবাদত মনে করেছি, অন্যায় সুবিধা নেইনি: বিদায়ী ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত:শনিবার, ২৯ অক্টো ২০২২ ০৭:১০

চাকরি এবাদত মনে করেছি, অন্যায় সুবিধা নেইনি: বিদায়ী ডিএমপি কমিশনার

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিদায়ী কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘চাকরিজীবনে কোথাও কোনো অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করিনি। কারণ চাকরিকে সারাজীবন এবাদত মনে করেছি।’

শনিবার ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২২’ উপলক্ষে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শফিকুল ইসলাম এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে উদ্দেশ করে বিদায়ী ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘চাকরি জীবনে আপনার যে আশীর্বাদ মাথার উপরে ছিল তা কখনই ভুলব না। চাকরিটাকে এবাদত মনে করেছি, চাকরি জীবনে কোথাও থেকে কোনো অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করিনি। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে ভালোভাবে চলতে আপনি (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) পেছন থেকে যে সাপোর্ট দিয়েছেন, সেজন্য আপনাকে আলদাভাবে স্যালুট ও শ্রদ্ধা।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আইজিপি হিসেবে যাকে বেছে নিয়েছেন, তিনি ভালো করবেন। এ আস্থা আমার রয়েছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে কতিপয় দুর্বৃত্তের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না। যতক্ষণ শ্বাস আছে, যতক্ষণ আশা আছে ততক্ষণ পুলিশ বাহিনী লড়াই করবে।’

শনিবার ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম অবসরে যাচ্ছেন। ২০ অক্টোবর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। নতুন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন খন্দকার গোলাম ফারুক।

শফিকুল ইসলাম ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গতবছরের অক্টোবরে তার চাকরির মেয়াদ একবছর বাড়ানো হয়। বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের অষ্টম ব্যাচের এই কর্মকর্তা ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর এএসপি হিসেবে পুলিশে যোগদান করেন। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায়।

কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে বিদায়ী কমিশনার বলেন, ‘আমি ডিএমপি কমিশনার হওয়ার ৫-৬ মাস যেতেই করোনা এসেছে। সে সময় বিধি-নিষেধের কারণে স্বাভাবিক সভা-সমাবেশ বন্ধ হয়ে যায়। সেজন্য আমি খুব বেশি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের জন্য কাজ করতে পারিনি। তারপরেও আমি চেষ্টা করে গেছি এলাকার মানুষ নিয়ে কাজ করার জন্য।’

ইভটিজিং, নারী নির্যাতন, যৌতুক, মাদকের মতো সামাজিক সমস্যা রোধে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে জানিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আগে এসব সামাজিক সমস্যা প্রতিরোধে আলাদা আইন ছিলো না। পর্যায়ক্রমে যখন অপরাধ বাড়তে থাকলো তখন আইন হলো। আইন কঠোর থেকে কঠোর হলো। কিন্তু শুধু আইন করে কী অপরাধ নির্মূল সম্ভব হয়েছে? হয়ত কমেছে কিন্তু খুব বেশি লাভ হয়নি। এসব সামাজিক সমস্যা যদি সবাই মিলে প্রতিরোধ করি তাহলেই এ অপরাধ থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।’

বিদায়ী কমিশনার বলেন, ‘প্রত্যেক মাদকসেবী টাকা জোগাড় করতে অপরাধে জড়ায়। একসময় মাদক ব্যবসায় জড়ায়। একজন মাদক ব্যবসায়ীকে ধরলে শত শত ব্যবসায়ী তৈরি হচ্ছে। আজকে যে মাদক খায় সেই ভবিষ্যতের ব্যবসায়ী হবে। সামাজিকভাবে সবাই মিলে যদি এটা প্রতিরোধ করতে না পারি তাহলে শুধু জেল দিয়ে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়।’ আমরা সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করি; আমরাই নির্দ্ধারণ করব আমাদের সমাজ কেমন হবে। সবাই হাত মেলালে সমাজের গুটিকয়েক দুর্বৃত্ত পালানোর পথ খুঁজে পাবে না বলেন শফিকুল ইসলাম।