৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
প্রকাশিত:মঙ্গলবার, ১৯ জুলা ২০২২ ০৯:০৭
স্টাফ রিপোর্টার:- কোম্পানীগঞ্জের ধলাই সেতু থেকে দয়ারবাজার পর্যন্ত পৌনে চার কিলোমিটার সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে প্রায় চার মাস ধরে। এর মধ্যে রাস্তায় পিলার গেড়ে ও মাটি দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কাজ বন্ধ থাকার পরও রাস্তায় পিলার ও মাটি দিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের ওপর পিলার ও মাটি দিয়ে বন্ধ করার কারণে এ সড়ক দিয়ে অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। লোকজন কোনো রকমে হেঁটে চলাচল করছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের সঙ্গে পূর্ব ইসলামপুর ও উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের অর্ধ লক্ষ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক। এ সড়কের পাশে কলাবাড়ি, কালিবাড়ি, বালুচর ও দয়ারবাজার এলাকার প্রায় দশ হাজার পরিবার বাস করেন। একই সঙ্গে সড়কের দুই পাশে দোকানপাটসহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও আছে। কলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ভাটরাই উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদেরও এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। কিন্তু সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখায় মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ধলাই সেতু-কলাবাড়ি-দয়ারবাজার সড়ক সংস্কারে ১৪ কোটি ৪৬ লাখ ১ হাজার ৬১৪ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। তিন দশমিক পঁচাত্তর কিলোমিটার এ সড়কের কাজ পায় মেসার্স মমিনুল হক এবং মেসার্স এম রহমান (জেভি)। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি কাজ শুরু করে। আগামী সেপ্টেম্বরে কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখা ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। তাও আবার গত চার মাস থেকে কাজ বন্ধ।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজদ বলেন, মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে আছে। প্রকল্পের মেয়াদ ৭ মাস পার হলেও কাজের অগ্রগতি তেমন নেই। যতটুকু কাজ হয়েছে, তাতে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ‘রাস্তা বন্ধ রেখে কাজ করার রুটিন তারা কই পেলো’- প্রশ্ন আওয়ামী লীগ সভাপতির। তিনি বিষয়টি স্থানীয় এমপিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করেছেন বলেও জানান।
স্থানীয় দয়ারবাজারের পল্লি চিকিৎসক মোঃ কালাম বলেন, গত রোববার রাতে স্থানীয় গর্ভবতী এক মহিলা প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। রাস্তা বন্ধ থাকায় স্বজনরা তাকে হাসপাতালে নিতে পারেননি।
স্থানীয় যুবক আহমেদ নুর বলেন, রাস্তা কারো বাপের সম্পদ নয়। এভাবে দখল করে রাখবেন। জনস্বার্থে জনগণের রাস্তা খুলে দিন।
কালিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা সজিবুল ইসলাম জয় বলেন, চার মাস ধরে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। কাজও করছে না। এ কেমন ঠিকাদার। এদের কারণেই সরকারের সমালোচনা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য চেরাগ আলী বলেন, মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ঠিকাদারদের বারবার বলা হলেও এ কাজে তাদের কোন গরজ নেই। কাজ শেষ না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময়ক্ষেপণ করছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। কয়েক দিন পর আবার কাজ শুরু করবেন।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত ব্যক্তি ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অখিল বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় লোকজনের দাবির প্রেক্ষিতে রাস্তাটি আপাতত চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আমরা আবার কাজ শুরু করব।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, জনচলাচল স্বাভাবিক করতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। ১৫ জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ শতাংশ কাজ হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ করার কথা। এ জন্য তাদেরকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
অফিস :ইস্ট এন্ড, তালতলা ,সিলেট-৩১০০, বাংলাদেশ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এমদাদুল হক
বার্তা সম্পাদকঃ আবু জাবের
মোবাইলঃ ০১৭১১৩৩১০৭০
ইমেইলঃ surmaview24@gmail.com
Helpline - +88 01719305766