১৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং
প্রকাশিত:বুধবার, ০৬ জুলা ২০২২ ০৭:০৭
বিশেষ প্রতিনিধি, মোঃ সাহেদ আহমদ:- বন্যায় বিপর্যন্ত সিলেটেরা জনপদে মড়ার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ লোডশেডিং। এমনিতে বন্যার কারণে পক্ষকাল সিলেটের অধিকাংশ গ্রামই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত ছিল। শুধু বিদ্যুৎ নয় সিলেটের আকাশে সূর্যের দেখাও মিলেনি ২০ দিন। বৃষ্টি কমলে গত ২ জুলাই থেকে প্রখর রোদে পুড়েছে প্রকৃতি, তাপমাত্রাও বেড়েছে। ভ্যাপসা গরমে দুর্বিষহ জনজীবন। এরমধ্যে এসএসসি পরীক্ষারও প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ অবস্থায় মানুষকে বিপাকে ফেলেছে ভয়াবহন লোডশেডিং।
শহর থেকে গ্রাম, সবখানে ভয়াবহ লোডশেডিং। তবে বেশি ভোগান্তির শিকার গ্রামীণ জনপদের মানুষ। গ্রামে রাতদিন সমানতালে চলে লোডশেডিং। শহরের বিভিন্ন এলাকাগুলো পিডিবি’র অধীনে থাকায় অনেকটা রুটিন করে লোডশেডিং করা হয়। তবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে থাকা গ্রামীণ জনপদের মানুষকে কঠিন দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে।
গ্রামে ২৪ ঘন্টার বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎহীন থাকে, এমন অভিযোগ বাসিন্দাদের। রোববার থেকে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে, বলেও জানিয়েছেন গ্রামীণ জনপদের লোকজন।
সূত্রমতে, গ্রামীণ জনপদে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সবখানে লাইন টেনে দিয়েছে। কিন্তু গ্রাহকের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ দিতে পারছে না। এ কারণে লোডশেডিং লেগেই থাকে গ্রামাঞ্চলে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার) থেকে চাহিদার তুলনায় গ্রীড কন্ট্রোল রুম থেকে সরবরাহ কম দেওয়া লোড শেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। আর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও শিল্প কারখানাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রেখে গ্রাহক পর্যায়ে সঞ্চলন কেন্দ্রগুলোতে কম সরবরাহ দেওয়াতে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
এ বিষয় সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পরিচালক আব্দুল আহাদ বলেন, গত ২/৩ দিন থেকে লোডশেডিং শুরু হয়েছে। তবে খুব শিগগিরই গ্রাহক পর্যায়ে এই সমস্যা হবে আশাবাদি তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় ১৬ হাজার মেগাওয়াট গ্যাস ভিত্তিক। আর ২০ হাজার মেগাওয়াট হলেও জেনারেশনে থাকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট।
ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্র ৪৮ মেঘাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সোমবার ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে জাতীয় গ্রীড নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এদিন সকালে সরবরাহ ছিল ১৫ মেঘাওয়াট।
সঞ্চালন কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা জানান, চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সরবরাহ কম থাকলেও আনব্যালেন্সড হয়ে পড়ে। তখন বিদ্যুৎ আপ-ডাউন করে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সরবরাহ ঠিক রাখতে গিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিং করতে হয়।
জানা গেছে, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ৯০ মেগাওয়াটের দু’টি বিদ্যুৎ উৎপান কেন্দ্র রয়েছে। এর একটি উৎপাদনে আছে। অন্যটি বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া কুশিয়ারা ম্যাক্স পাওয়ার প্লান্ট ১৭০ মেগাওয়াট, বারাকাতউল্লাহ ডায়নামিক পাওয়ার প্লান্ট ৫১ মেগাওয়াট, হোসাফ এনাটিক প্রিমা ২০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করে।এর বাইরে সিলেটের কুমারগাও পিডিবি’র ১৫০ ও ৫০ এবং হোসাফের ৫০ মেঘাওয়াট এবং শাহজিবাজারে ৪০০ মেগাওয়াট, বিবিয়ানায় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে জাতীয় গ্রীডে যায়। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অধিকাংশ গ্যাস ও এইচ.এফ ফুয়েল ভিত্তিক। এই জ্বালানী বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আর এখাতে সংকট দেখা দেওয়ায় জাতীয়ভাবে লোড শেডিংয়ের মাত্রা বাড়ছে।
Helpline - +88 01719305766