দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি:- সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে অব্যাহত ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের তীব্রতা হ্রাস পেলেও নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর থেকে এখনো সরেনি পানি।
দিন যতই গড়াচ্ছে, দূর্ভোগ ততই বাড়ছে। পরিবার-পরিজন ও গবাদি পশু পাখিসহ জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসি লাখো মানুষ।
এদিকে সরকারের পাশাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও এনজিও সংস্থাসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনসহ ব্যক্তি উদোগে পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তবুও চাহিদা মিটছেনা। সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনগুলোর প্রতি আরো পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দের আকুতি জানিয়েছেন বানভাসিরা।
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় চিলাই, খাসিয়ামার ও চেলা নদীর বেড়িবাঁধ কাম সড়কের শতাধিক স্থানে ভাঙন ছাড়াও উপজেলার সবকটি পাকা ও কাঁচা সড়কজুড়ে ভাঙনসহ ধসে গেছে অনেক ব্রিজ-কালভার্ট। ফলে অফিসপাড়াসহ জেলা ও উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন পেশাদার মানুষজন।
অপরদিকে বজ্রপাত, টিলা ধস ও নৌকা ডুবিতে তিন শিক্ষার্থীসহ সরকারি হিসাবে ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটলেও বেসরকারি হিসাবে এর দ্বিগুণ। হাঁস-মোরগ ছাড়াও ভেসে গেছে শতাধিক গরু-ছাগল। পাহাড়ি ঢলে ভারত থেকে ভেসে আসা মৃত বন্য প্রাণিসহ স্থানীয় মৃত গবাদি পশু লাশের দূর্গন্ধে ক্রমশ দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ধসে গেছে শত শত কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি। পানি পুরোপুরি না কমায় বাঁচার তাগিদসহ ত্রাণের আশায় গৃহহীন পানিবন্দি ৫০ ভাগ মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছে।
ত্রাণসামগ্রী বিতরণে সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি অংশ নেন সরকার দলীয় স্থানীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিক, উপজেলা আ.লীগের আহবায়ক অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীর প্রতিকসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ।
তবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বিত্তবানদের দেওয়া ত্রাণের তুলনায় সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল বলে মন্তব্য করেছেন বানভাসিরা। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীসহ বন্যা পরবর্তী গৃহ ও কৃষি পূনর্বাসনের জন্য স্থানীয় এমপি মানিকসহ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আকুল আকুতি জানিয়েছেন বানভাসিরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা প্রিয়াংকা এ প্রতিবেদককে বলেন, বন্যা দূর্গত এলাকায় সরকারি ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই চাহিদামাফিক ত্রাণ আসছে। বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে আমাদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবিরাও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বন্যা পরবর্তী পূনর্বাসনের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।