১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
প্রকাশিত:শনিবার, ২৫ জুন ২০২২ ০৯:০৬
সুরমাভিউ:- দশ দিন ধরে পানি বন্দী রয়েছেন সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলাবাসী। পানি বন্দী মানুষদের যা ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
উপজেলার নি¤œাঞ্চল পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে বানবাসী মানুষের মধ্যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির হাহাকার চলছে। অসুস্থ অনেকেই চিকিৎসা বঞ্চিত রয়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে সেখানে মেডিকেল টিম পাঠানো প্রয়োজন। বন্যার কারণে এক সপ্তাহ যাবৎ এই ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এই ইউনিয়নে আশ্রয় কেন্দ্রের উপযোগী কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই।
ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন-আজিজপুর বাজার হারুন মাকের্টে প্রায় ৪০টি পরিবার, বাজার সংলগ্ন হেনা কমিউনিটি সেন্টারে ১০টি পরিবার, আজিজপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর বাড়িতে ১০টি পরিবার, নলজুড় গ্রামে জেসমিন-ছাদ জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪০টি পরিবার, নলজুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০টি পরিবার ও নলজুড় টিএ কমিউনিটি সেন্টারে ৬০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। আজিজপুর বাজারের পাশে উঁচু জায়গায় তাবু বানিয়ে কয়েকটি পরিবারসহ বাজারের নিকটবর্তী এলাকায় আরো প্রায় দুই-আড়াই শ’ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে একেকটি রুমে গাদাগাদি করে কয়েকটি পরিবার কোনো রকম দিন যাপন করছেন। আজিজপুর বাজার মার্কেটে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা দোহালিয়া গ্রামের সরকুম আলী ২২জুন মারা যান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তথ্য মতে- পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে সাড়ে ১৬মেট্রিন চাল, নগদ ৪০হাজার টাকা ও আড়াই শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই ত্রাণ সামগ্রী এখনও বন্যার্তদের হাতে পৌঁছায়নি বলে তারা অভিযোগ করেছেন।
পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ আহমদ মঞ্জু বলেন, ত্রাণ বিতরণ নিয়েও স্বজনপ্রীতি চলছে। উপজেলার সবচেয়ে নি¤œাঞ্চল এবং বন্যা কবলিত এলাকা পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন। একেকটি বাড়ি একেকটা দ্বীপ। এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি উঁচু স্থানে হতো তাহলে সবচেয়ে বেশি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র এ ইউনিয়নেই হতো। সরকারি কোনো আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় মানুষের দুর্দশার শেষ নাই। প্রতিটি উঁচু বাড়ি একেকটি আশ্রয় কেন্দ্র তা জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে নেই। অসংখ্য পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যান্য এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এখানে দাপুটে কোনো নেতা নেই তাই মন্ত্রী কিংবা সেনা বাহিনীও আসার সুযোগ নেই। এই মহা দুর্যোগে সঠিকভাবে ত্রাণ বিতরণের মন মানসিকতা থেকে আমরা এখনও বেরিয়ে আসতে পারিনি এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। এই ইউনিয়নের দোহালিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুরো গ্রামের মানুষ পানি বন্দী। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে ওঠেছেন।
প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী না পেয়ে গ্রামের মানুষ খেয়ে না খেয়ে আছেন। কয়েকটি পরিবার সামান্য শুকনো খাবার পেয়েছে তা কয়দিনই বা খাওয়া যায়। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো লজ্জায় কারও কাছে হাত পাততেও পারছেন না। পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনহার আলী বলেন, আমার ওয়ার্ডে আজিজপুর, দোহালিয়া ও আলমপুর গ্রামের মানুষ পানি বন্দী হয়ে চরম কষ্টে দিন যাপন করছেন সরকারি কোনো ত্রাণ সহায়তা এখনো আমার কাছে আসে নি।
অফিস :ইস্ট এন্ড, তালতলা ,সিলেট-৩১০০, বাংলাদেশ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এমদাদুল হক
বার্তা সম্পাদকঃ আবু জাবের
মোবাইলঃ ০১৭১১৩৩১০৭০
ইমেইলঃ surmaview24@gmail.com
Helpline - +88 01719305766