২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
প্রকাশিত:শনিবার, ২৫ জুন ২০২২ ০৯:০৬
সুরমাভিউ:- সিলেটের বালাগঞ্জে বন্যার ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে। ত্রাণের জন্য বানভাসিদের মধ্যে চলছে হাহাকার। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দী পরিবারগুলো অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে সরকারি-বেসরকারিভাবে শুকনো খাবার ও কিছু ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হলেও গ্রামে ত্রাণ নিয়ে কেউ যাচ্ছেন না। গ্রামের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষ নিদারুন কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের খোঁজ নেয়নি সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা। উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে এবং আরও পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে।
এ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা একেক জন একেক রকম তথ্য দিচ্ছেন। তাদের দেয়া তথ্যেও নানা গরমিল পাওয়া গেছে। এ যেন ত্রাণের তথ্য নিয়ে রীতিমত তেলেছেমাতি। ২২জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার স্বাক্ষরিত একটি তালিকায় দেখা গেছে- উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৬১৮টি পরিবারের ২৮৪৩জন আশ্রয় নিয়েছেন। যদিও বেসরকারি হিসাব মতে এর সংখ্যা আরও কয়েক গুন বেশি। ওই তালিকায় দেখা গেছে, সাড়ে ৮৫ মেট্রিক টন চাল, ৭৭০প্যাকেট শুকনো খাবার, ২লক্ষ ৩হাজার ৫৯৫টাকা ও ১লক্ষ ৫৫হাজার টাকার শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী আক্তার রোজিনা বলেন, এগুলো অর্থ বছরের বরাদ্দ থাকলেও তা বন্যাকালীন সময়ে বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে বুধবার রাতে জানানো হয়েছে- পূর্ব পৈলনপুর ও বোয়ালজুড় ইউনিয়নে সাড়ে ১৫মেট্রিক টন, দেওয়ান বাজার ইউনিয়নে সাড়ে ২১মেট্রিক টন, পশ্চিম গৌরীপুর, বালাগঞ্জ ও পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নে সাড়ে ১৬মেট্রিক টন করে একশত দেড় মেট্রিক টন চাল উপ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সরকারি বরাদ্দের নগদ ১০লক্ষ টাকা থেকে ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ইউনিয়নগুলোতে বন্টন করা হয়েছে। এর সাথে প্রতিটি ইউনিয়নে ৪০হাজার টাকা করেও দেয়া হয়েছে। কিন্তু বন্যাকবলিতরা ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। সরকারি তথ্য মতে বিতরণ করা এসব ত্রাণ কোথায় যাচ্ছে কারা পাচ্ছে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ১৭জুন রাতে কুশিয়ারার নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরদিন সকালে উপজেলার শতভাগ এলাকার বসতঘর-গোয়ালঘর ও রান্নাঘর পানিতে তলিয়ে যায়। বন্যার্ত মানুষ গবাদি প্রাণীকে নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উঁচু বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলার প্রায় ৭০হাজার পরিবারের প্রায় ২লক্ষাধিক মানুষ দশ দিন ধরে পানিবন্দী থাকলেও অধিকাংশ এলাকায় এখনও সরকারি বা বেসরকারি ত্রাণসামগ্রী পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পানিবন্দী লোকজন বলছেন, দেড় মাস ধরে টানা বর্ষণে সিলেট বিভাগ অঞ্চলে দফায়-দফায় হানা দিচ্ছে বন্যা। এবারের বন্যা ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। কিন্ত এরপরও উপজেলা প্রশাসনের কোনো ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। এখন এমন পরিস্থিতিতে না খেয়ে মরতে হবে।
উপজেলার দূরবর্তী গ্রামের পানিবন্দী লোকজন বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা জনপ্রতিনিধির দেখা পাচ্ছি না। তারা যাতায়াত সুবিধা বিবেচনায় উপজেলার নিকটবর্তী এলাকায় যাচ্ছেন। নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে লোক দেখানো শুকনো খাবার বিতরণের নামে ফটোসেশনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। যারা যৎ সামান্য ত্রাণ পাচ্ছে তারা বারবার পাচ্ছে, কিন্তু আমাদের দেখতে কেউই আসছেন না। এদিকে, বন্যার পানির তোড়ে বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়কের কাশিপুর ব্রীজের সংযোগস্থলে সড়কে ফাঁটল দেখা দিয়ে বেশ কিছু অংশ দেবে গেছে। যে কোনো সময় ভয়াবহ ভাঙন হতে পারে।
উপজেলা মৎস কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র বণিক বলেন, বন্যায় উপজেলার প্রায় আড়াই হাজার পুকুর ও মৎস খামারের মাছ মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দশ কোটি টাকা।
অফিস :ইস্ট এন্ড, তালতলা ,সিলেট-৩১০০, বাংলাদেশ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এমদাদুল হক
বার্তা সম্পাদকঃ আবু জাবের
মোবাইলঃ ০১৭১১৩৩১০৭০
ইমেইলঃ surmaview24@gmail.com
Helpline - +88 01719305766