দোয়ারাবাজারে ভয়াবহ বন্যা ঘরবাড়ি ধস ও ডাকাত আতঙ্কে বানভাসিরা
প্রকাশিত:শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২ ০৯:০৬
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি:- সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ভয়াবহ বন্যার ৬ দিন পার হলেও ৫০ ভাগ মানুষের বাড়িঘর থেকে পানি নামেনি এখনো। স্মরণকালের সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় বজ্রপাত, টিলা ধস ও নৌকা ডুবিতে তিন শিক্ষার্থীসহ (দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ) সরকারি হিসাবে ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটলেও বেসরকারি হিসাবে অকালে ঝরে গেছে অন্তত ২০টি প্রাণ। হাঁস-মোরগ ছাড়াও ভেসে গেছে শতাধিক গরু-ছাগল। পাহাড়ি ঢলে ভারত থেকে ভেসে আসা মৃত বন্য প্রাণিসহ পচে যাওয়া লাশ ও মৃত গবাদি পশুর দূর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়েছে। ধসে গেছে শত শত কাঁচা ও আধাপাকা ঘর।
বন্যা উপদ্রুত এলাকা থেকে ধীরগতিতে পানি নামছে বলে জানা গেছে। পানি না কমায় গৃহহীন ও পানিবন্দি ৫০ ভাগ মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত বিভিন্ন বিভিন্ন রোগের প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছে উপদ্রæত এলাকায়। এদিকে নৌকা দেখলেই ত্রাণের আশায় হাঁটু ও কোমর সমান পানিতে দাঁড়িয়ে থাকেন বানভাসিরা।
অপরদিকে সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রাণসামগ্রীর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন, এনজিও সংস্থা, প্রবাসী ও ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত আর্থিক সহায়তা, রান্নাকরা খাবার ও বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। গত তিনদিন ধরে বানভাসিদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ মুহিবুর রহমান মানিক, উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতিকসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ।
তবে বেসরকারি ত্রাণসামগ্রীর তুলনায় সরকারি ত্রাণসামগ্রী অপ্রতুল বলে মন্তব্য করেছেন অভিজ্ঞজনরা। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীসহ বন্যা পরবর্তী গৃহ ও কৃষি পূনর্বাসনের জন্য স্থানীয় এমপি মুহিবুর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে আকুল আকুতি জানিয়েছেন বানভাসিরা।
অন্যদিকে গো-মহিষ ও জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় বিনিদ্র রাতদিন নৌ ডাকাতির আতঙ্কে কাটাচ্ছেন খামারিসহ বানভাসি শত শত পরিবার। বন্যা সৃষ্টির প্রথম দিন থেকেই উপদ্রব বেড়েছে নৌ ডাকাতির। এ যাবত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেক গবাদি পশু, নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান মালামাল অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নেয় ডাকাতদল। অবশ্য গত তিনদিন ধরে পানি হ্রাস পাওয়ায় ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবি দলের টহল অব্যাহত থাকায় ‘ডাকাত আতঙ্ক’ কিছুটা কমেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা প্রিয়াংকা এ প্রতিবেদককে বলেন, বন্যাদূর্গত এলাকায় সরকারি ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই চাহিদামাফিক ত্রাণ আসছে। বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবিরা কাজ করে যাচ্ছেন।