প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট প্রত্যাখ্যান করে সিলেটে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের মিছিল

প্রকাশিত:শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২ ০৮:০৬

প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট প্রত্যাখ্যান করে সিলেটে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের মিছিল

সুরমাভিউ:-  ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটকে প্রস্তাবিত গণবিরোধী বলে প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় গনতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখা।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর সুরমা পয়েন্টে থেকে শুরু করে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ করে। সমাবেশে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা সহ-সভাপতি সুরুজ আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গনতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান, মৌলভী বাজার জেলার সাধারন সম্পাদক রজত বিশ্বাস, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলার সাধারন সম্পাদক মোঃ ছাদেক মিয়া, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট শাহপরান থানার কমিটির সভাপতি মোঃ খোকন আহমদ, জেলার দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলার অন্যতম নেতা শুভ আজাদ শান্ত,প্রেস শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট জেলা সভাপতি এ কে আজাদ সরকার, স-মিল শ্রমিক সংঘ সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারন সম্পাদক আনছার আলী,ছাত্রনেতা বদরুল আজাদ সহ প্রমুখ।

প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ার আলোচনায় বক্তারা- গণবিরোধী এবং উন্নয়নের নামে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের অবাধ লুটপাটের বাজেট হিসাবে আখ্যায়িত করে আরও বলেন, এ বাজেট শ্রমিক-কৃষক-জনগণের জীবনমানের বৃদ্ধি ঘটবে না, বরং ভ্যাটের আওতা ও পরিধি বৃদ্ধি করার ফলে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের ওপর চাপ বৃদ্ধি পাবে ও তারা আরও ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। কর্ম সংস্থানহীন কথিত এ উন্নয়নের বাজেটের ফলে মানুষের দুঃখ-কষ্ট আরও বৃদ্ধি পাবে। দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রেখেছে যে কৃষক, তাদেরই ছেলেময়ে গার্মেন্টস ও প্রবাসী শ্রমিক তাদের স্বার্থে বাজেট প্রণয়ন হয়নি। এ বাজেটে তাদের জন্য কোন দিকনির্দেশনাও নেই। করোনা মহামারী ও সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপি খাদ্য সঙ্কট ও কর্মহীনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা মোকাবেলায় প্রয়োজন ছিল বাজেটে কৃষক ও কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া। উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য কৃষি উপকরণের মূল্যে উৎসে ভর্তুকি প্রদান, সেচে ব্যবহারকৃত বিদ্যুৎ বিনা মূল্যে প্রদান, সুদ মুক্ত কৃষি ঋণ প্রদান, উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, বীজ ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, সরকারী মজুদ ব্যবস্থাপনার পরিধি বৃদ্ধি, প্রকৃত কৃষক যাতে ভর্তুকির সুবিধা পায় তা নিশ্চিতকরণ ও বরাদ্দ সুবিধা বৃদ্ধি করা। সাথে সাথে কৃষি উৎপাদনের অন্যান্য সমস্যাগুলি সমাধান, হাওর অঞ্চলে পাহাড়ী ঢল মোকাবেলায় সুরমা, কুশিয়ারা নদী মেঘনা পর্যন্ত খনন, সুরমা ও কুশিয়ারার সাথে যুক্ত সকল পাহাড়ী উপনদী খনন এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণে বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা। কিন্তু তা হয় নাই। বাজেটে কৃষি খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা মূলত কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়ন এবং সারে ভর্তুকি প্রদানের নামে অবাধ লুটপাটের জন্য। সার ও জ্বালানী সরবরাহের সঙ্কট মোকাবেলারও সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেই। কর্ম সংস্থান সৃষ্টি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য কৃষি ভিত্তিক শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারেও কোন সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নাই। কৃষি খাতে যে অবৈধ মজুতদারি, বিপননে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি তা মোকাবেলা কোন কার্যকর পদক্ষেপ নাই। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় যেখানে প্রতি ইঞ্চি জমিতে কৃষি উৎপাদন করা প্রয়োজন সেখানে বাজেটে এ বিষয়ে কোন কর্মপরিকল্পনা নাই। ভূমিহীন গরিব কৃষকদেরকে রক্ষার জন্য রেশনিংয়ে কোন কর্মপরিকল্পনা ও বরাদ্দ নাই। সামগ্রিক বিচারে এ বাজেট হচ্ছে উন্নয়ন, মেগা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের স্বার্থ রক্ষাকারী গণবিরোধী বাজেট।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ