বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট

প্রকাশিত:বুধবার, ২৫ মে ২০২২ ০৮:০৫

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট

সুরমাভিউ:-  বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, বোরো ধানের দাম মণ প্রতি ১২’শ টাকা নির্ধারণ, প্রতি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খুলে কমপক্ষে ৫০ লাখ টন ধান খোদ কৃষকদের কাছ ক্রয় করার দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার (২৫ মে) বিকাল ৫টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার সংগঠক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেট জেলা শাখার সমন্বয়ক আবু জাফর, জেলা সদস্য প্রণব জ্যোতি পাল, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট সিলেট সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক রুমন বিশ্বাস, হুসেন আহমদ, ইউসুফ আলী, মনজুর আহমদ, সুরুজ আলী, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারাদেশে বোরো ধান কাটা মাড়াই মৌসুম চলছে। সরকার ধানের দাম মণ প্রতি ১০৮০ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। আমরা উৎপাদন খরচের সাথে ৪০% বাড়তি যুক্ত করে ফসলের দাম নির্ধারণের দাবি করেছি। বোরো ধানের দাম কমপক্ষে ১২’শ টাকা নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে কৃষকের লোকসান হবে, কৃষক সর্বশান্ত হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার এ বছর মাত্র সাড়ে ৬ লাখ টন ধান, সাড়ে ১১ লাখ টন মোটা চাল ও ৫০ হাজার টন আতপ চাল ক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে। কৃষক ধান উৎপাদন করে, চাল নয়। ধান থেকে চাল তৈরি করে চাতাল ও মিল মালিক সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। অথচ সরকার ধান কিনবে কম, চাল কিনবে বেশি। এর মাধ্যমে সরকার কৃষকের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মিল মালিক সিন্ডিকেট ব্যবাসীদের স্বার্থ রক্ষা করছে। আবার দলীয়করণের কারণে সরকার নির্ধারিত দামেও কৃষক গুদামে ধান বিক্রি করতে পারে না। গুদাম কর্মকর্তারা ধান ভেজা, আদ্রতা বেশি একথা বলে কৃষককে হয়রানী করে। ইউনিয়ন-উপজেলা পর্যায়ে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় গাড়ী ভাড়া দিয়ে জেলা শহরে ধান নিয়ে আসার পর যখন বিড়ম্বনা ও হয়রানীর শিকার হতে হয় তখন কৃষক ৬০০/ ৭০০ টাকায় বাজারে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়। কৃষকের হয়রানী বন্ধের জন্যে আমরা প্রতি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খোলার দাবি করেছি। আর প্রতি ইউনিয়নে একটি করে ক্রয়কেন্দ্র নির্মাণ বাবাদ ১ কোটি টাকা করে বাজেটে মাত্র ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সাড়ে ৬ লক্ষ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা কোন ব্যাপারই নয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কৃষি-কৃষক বাঁচাতে হলে ধানের দাম ১২০০ টাকা মণ নির্ধারণ ও প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে ১টি করে ক্রয়কেন্দ্র খুলে খোদ কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা দরকার। সিন্ডিকেট যাতে চালসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে বাজার অস্থিতিশীল করে জনদুর্ভোগ বাড়াতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও খাদ্য পণ্যের মজুদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কমপক্ষে ৫০ লাখ টন ধান ক্রয় করা প্রয়োজন। আর খাদ্য শস্য সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য গুদাম-সাইলো নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় তিন বছর পূর্বেই ২০০ সাইলো-গুদাম নির্মাণের সরকারি সিদ্ধান্ত হলেও আজও পর্যন্ত তার কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় ও বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির কারণে সিলেট অঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। বক্তারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও সারাদেশে ক্ষেতমজুরসহ ও গ্রামীণ শ্রমজীবীদের জন্য আর্মি রেটে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ