৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০২২ ০৮:০৩
শেষ মুহূর্তে এসে বাদ পড়লেন কামরুল হাসান শাহীন ও শাকিল মোর্শেদ। সিলেট জেলা বিএনপি’র কাউন্সিলে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এরমধ্যে কামরুল হাসান শাহীন ছিলেন জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও শাকিল মোর্শেদ সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী। কাউন্সিলর তালিকায় তাদের নাম না থাকার কারণে প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপি’র নির্বাচনী কর্মকর্তারা।
অথচ ২১শে মার্চের সম্মেলনের প্রথম তারিখ পর্যন্ত তারা প্রার্থী ছিলেন। ওই দিন সম্মেলন হলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারতেন। কিন্তু সম্মেলনের তারিখ পেছানোর পরপরই তাদের প্রার্থিতা বাতিল হওয়া নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে চলছে কানাঘুষাও।
তবে নির্বাচন কর্মকর্তা নুরুল হুদা জানিয়েছেন- নিয়ম হচ্ছে যারা প্রার্থী হবেন, তারা কাউন্সিলর হতে হবে। প্রথম পর্যায়ে আমরা ভোটার তালিকা পাইনি। সম্মেলনের একদিন আগে ভোটার তালিকা পেয়েছি। আর ওই ভোটার তালিকায় তাদের নাম পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এদিকে- প্রার্থিতা বাতিল হলেও আপিলের সুযোগ রাখা হয়নি। এটিকে অপমানজনক বলছেন বাদ পড়া নেতারা। বিষয়টি তারা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবগত করেছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে লিখিত পত্রও দেয়া হয়েছে। কামরুল হাসান শাহীন সিলেট ছাত্রদলের সাবেক তুখোড় নেতা। যুবদল হয়ে তিনি বিএনপিতে আসেন। সিলেট ছাত্রদলের সাপ্লাই বলয়ের শীর্ষ নেতা তিনি। গ্রুপ রাজনীতিতে শাহীনের অবস্থান শক্তিশালী। কিন্তু নানা কারণে তিনি বিএনপিতে অবস্থান সুদৃঢ় করতে পারেননি। এ নিয়ে ছিল আক্ষেপও। তবে- এবারের সম্মেলন ও কাউন্সিলের তোড়জোড় শুরু হওয়ার পর শাহীন সক্রিয় হন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়ে মাঠে সক্রিয় থাকেন। তিনি নিজ এলাকা বিয়ানীবাজারের একটি ইউনিয়নের সদস্য। কামরুল হাসান শাহীন জানিয়েছেন- ‘২১শে মার্চ কাউন্সিল হলে তিনি প্রার্থী থাকতেনই। এখন যখন তারিখ পরিবর্তন করা হলো তখন তার প্রার্থিতা বাতিল করা হলো। তার প্রতি এটি অবিচার করা হয়েছে। যেহেতু দল করেন সে কারণে দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে। তবে- অবিচার ও ষড়যন্ত্রের বিষয়টি তিনি কেন্দ্রকে অবগত করেছেন।’ তিনি জানান- ‘কাউন্সিলকে ঘিরে মাঠে থাকায় তার পক্ষে অনেকেই কাজ করেছেন। তারা বেশি মর্মাহত হয়েছেন। তবে- দলের বৃহৎ স্বার্থে সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান তিনি।’ সাবেক ছাত্রদল নেতা শাকিল মোর্শেদ স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তিনি জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী হন। তার সঙ্গে যারা ওই পদে প্রার্থী হয়েছেন তারা সবাই সমসাময়িক। এ কারণে শাকিল মোর্শেদ এবারের কাউন্সিলে পরিশ্রমও করেছেন। জানালেন- সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী হওয়ার পর তিনি গোটা জেলা চষে বেড়িয়েছেন। কাউন্সিলরদের সাড়া পেয়েছেন। জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু শেষ সময়ে এসে ষড়যন্ত্র করে তাকে আটকে দেয়া হয়েছে। এরপর দলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তিনি বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অবগত করেছেন বলে জানান। এদিকে- অঙ্গ সংগঠন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হওয়ার কারণে জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি সদস্য আবদুল আহাদ খান জামালের সদস্য পদও বাতিল করা হয়। জামাল সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। এদিকে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর দিন গত মঙ্গলবার সভাপতি প্রার্থী থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। হাইকমান্ডের পরামর্শে তিনি প্রার্থী থেকে সরে এসেছেন বলে জানান। এখন সভাপতি পদে মাঠে লড়াই করছেন সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। কাউন্সিলররা জানিয়েছেন- সভাপতি পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। আর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আফম কামাল। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা লোকমান আহমদ, দক্ষিণ সুরমা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ ও এডভোকেট মুজিবুর রহমান।
মানবজমিন
Helpline - +88 01719305766