সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়া আর নেই

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ ২০২২ ১১:০৩

সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়া আর নেই

সুরমাভিউ:-  সিলেট-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দানবীর ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়া আর নেই। বুধবার (১৬ মার্চ) তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে দশটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নাল্লিলাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।

মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

আমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও লেচু মিয়ার ঘনিষ্টজন রুহেল আহমদ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। উন্নত চিকিৎসার্থে তাঁকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়া সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। নিভৃতচারী দানশীল ব্যক্তি হিসেবেও তিনি পরিচিত।

তিনি ১৯৮৬ ও ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরোধিতা করে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০১ সালে তিনি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) ঢাকার ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে জানাজা শেষে বনানী গোরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হবে নিশ্চিত করেছেন তাঁর একমাত্র পুত্র সৈয়দ তানভীর হোসেন।

মরহুমের মৃত্যুর সংবাদে গোলাপগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।সৈয়দ মকবুল হোসেন ১৯৪৬ সালে সিলেটের গোলাপগঞ্জের পশ্চিম আমুড়া ইউনিয়নের সুন্দিশাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে বিএ এবং এমএ পাশ করেন। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।মকবুল হোসেন সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।তিনি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৫ সালে তিনি উপসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করে ব্যবসা শুরু করেন।তিনি তাঁর জন্মস্থান আমুড়া ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠাতা করেন ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় ও ডিগ্রি কলেজ।

এছাড়া বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা তিনি।সৈয়দ মকবুল হোসেন ১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিলেট-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে তিনি জড়িত থাকলেও ১৯৯১ সালের পর যোগ দেন বিএনপিতে।

১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে একই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতি থেকে তিনি অবসরে ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ