শান্তিগঞ্জে পুলিশি নির্যাতনে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ : এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
প্রকাশিত:সোমবার, ২১ ফেব্রু ২০২২ ১১:০২
সুরমাভিউ:- সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়া (৪২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে ওই ব্যক্তির মরদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভের সময় উপজেলা প্রশাসনের একটি গাড়ি এসে বিক্ষোভের সামনে পড়ে। এসময় গাড়িচালক বিক্ষোভ স্থল ত্যাগ করতে মরদেহের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয়। এই ঘটনায় ক্ষোব্ধ হয়ে এলাকার মানুষ লাঠিসোঠা নিয়ে সড়কে অবস্থান নেয়।
নিহত উজিরের পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে উপজেলার দরগাপাশা এলাকা থেকে একটি গরু চুরি হয়। এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পশ্চিম পাগলার শত্রুমর্দন গ্রামের উজির মিয়াকে গত ৯ ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) রাতে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের এস আই দেবাশীষ দেব, এসআই প্লাটন কুমার সিংহ ও আক্তারুজ্জামান তাকে নিজ বাসা থেকে সন্দেহমুলক আটক করে নিয়ে আসে। পরিবারের অভিযোগ উজিরকে আটক করে থানায় এনে অমানবিক নির্যাতন করে পরদিন বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি ) তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
পরে গুরুতর আহত উজির মিয়াকে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১ সপ্তাহ চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রাতে মারা যান তিনি।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আজ সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারী) সকালে উজির মিয়ার মরদেহ নিয়ে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করতে পাগলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ এসময় ইউএনও’র গাড়ি বিক্ষোভের মুখে পড়লে গাড়িচালক দ্রুত বিক্ষোভস্থল ত্যাগ করতে লাশের পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন। এতে বিক্ষোব্ধ জনতা আরো ক্ষেপে গিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে। দীর্ঘসময় সড়ক অবরোধ থাকায় এসময় দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এসময় ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়ে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করতে সক্ষম হন।
এঘটনায় বক্তব্যের জন্য শান্তিগঞ্জ থানার ওসির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এঘটনায় সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আসামিকে আটক করা হয়েছিল ৯ ফেব্রুয়ারি। একদিন হাজতে রেখে পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ‘১১ তারিখে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি চলে যান। এরপর কোনো একদিন হয়তো তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু আজকে সকালে নাকি তার মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনও বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’