শাবির উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ রাখার কর্মসূচি প্রত্যাহার করলো শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার, ২৭ জানু ২০২২ ১০:০১

প্রতিথযশা লেখক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে বুধবার সাতদিনের টানা অনশনের ইতি ঘটিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিন সকালে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইয়াসমীন হক। তবে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন অনশন ভাঙার পরই। সর্বশেষ গতকাল রাতে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ রাখার কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

দাবিগুলো হলো- উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগসহ ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ, ক্যাম্পাসের সবগুলো আবাসিক হল সচল রাখার বিষয়ে উদ্যোগ, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ সাহায্য দেয়া পাঁচ সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন, অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং অনশনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায়ভার বহন।

পাঁচটি দাবির মধ্যে একটি ইতোমধ্যে পূরণ হয়েছে। তিনটি দাবি শিগগিরই পূরণ হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মুখপাত্র । তবে উপাচার্যের পদত্যাগের মূল দাবি পূরণে কিছুটা সময় লাগতে পারে জানান ওই শিক্ষার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অনশনকারী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব ব্যয় মিটিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। সবগুলো আবাসিক হল দ্রুত সচল করার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করা হয়েছে।

চার নম্বর দাবি অনুযায়ী মামলা প্রত্যাহারের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার হবে বলে জানানো হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি এখনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তবে শিগগিরই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের সমস্যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আরও আলোচনা করতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র রাজ।

এদিকে অনশন ভাঙার পর উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ করে রাখার কর্মসূচি থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।

গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। পরদিন রবিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। ১৫ জানুয়ারি বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় শাবি কর্তৃপক্ষ।

তবে তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কিলোতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন। প্রায় ২৮ জন শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন। বুধবার সকালে তাদের অনশন ভাঙান অধ্যাপক জাফর ইকবাল।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ