খামারখালি জলমহালকে কেন্দ্র করে মারামারি, থানায় মামলা

প্রকাশিত:শুক্রবার, ১৫ অক্টো ২০২১ ০৮:১০

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:-  সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা কলকলিয়া ইউনিয়নের কামারখালি জলমহালের ১ নম্বর খন্ডকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিনে ও রাতে দফায় দফায় তেলিকোনা গ্রামে এই মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে জগন্নাথপুর থানায় তেলিকোনো গ্রামের দুই পক্ষ মামলা দায়ের করেছেন।
তেলিকোনা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে টুকেন রেইটে কামারখালি জলমহালের ১ নম্বর খন্ড ইজারা নিয়ে আসেন তেলিকোনা গ্রামের মৎস্যজীবীরা। প্রতিবছর জলমহালে মৎস্য আহরণ করতে গেলে একই গ্রামের সামছুল হক, আছাদুল হক, হাবিবুর রহমান, নাজিম উদ্দিন, বশর মিয়াসহ আরও কয়েকজন চাঁদা দাবি করে বসেন। তখনই দাঙ্গার সৃষ্টি হয়। এবারও এই জলমহালকে কেন্দ্র করে এসব ব্যক্তিরা চাঁদা দাবি করায় একাধিক মারামারি ঘটনা ঘটেছে।
এই ঘটনার জের ধরে শুক্রবার দুপুর অনুমান ২টায় উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে গ্রামের একটি পক্ষ জানান, গ্রামবাসীরা এই জলমহালে মাছ শিকারের জন্য টুকেন রেইটে ইজারা এনেছিলেন। এখন যার নামে ইজারা এনেছেন, সে অন্যত্র বিক্রি করে দিতে চায়। বিক্রি করতে বাঁধা দেওয়ায় মারামারির ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার পর বিকাল ৩টায় নিজ বাড়িতে যাবার সময় চলাচলের মেইন সড়কে আব্দুল বারিক (৪০) নামের এক ব্যক্তি ও স্ত্রী দিল নেহার বেগম (২৮) কে মারধর করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আহত আব্দুল বারিক বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
অপর দিকে, শুক্রবার দিবাগত রাত অনুমান আড়াইটায় এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে একই গ্রামের বিবাদী পক্ষ আবুল হোসেন তার নিজের টিনের চাপটা ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং ঘর ভাঙচোর করে। তবে আবুল হোসেনের পক্ষের লোকজন বলছেন প্রতিপক্ষ আগুন লাগিয়েছে এবং ঘর ভাঙচোর করেছে। এই ঘটনায় আবুল হোসেন বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
তেলিকোনা গ্রামের মামলার বাদী আব্দুল বারিক বলেন, আমি পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বাড়িতে যাবার পথে আটকিয়ে মারধর করেছে আবুল হোসেনের লোকজন। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।
অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন বলেন, গ্রামের ১৯৮ জন মৎস্যজীবী মিলে টুকেন রেইটে মাহতাব উদ্দিনের নামে কামারখালের ১ম খন্ড ইজারা নিয়ে আসি। এখন মাহতাব উদ্দিন অন্যের কাছে এই জলমহাল বিক্রি করতে চায়। এতে বাঁধা দেয়ায় আমাদের উপর চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছে। তিনি বলেন, আমার বাড়ির সামনে মেইন সড়কে ঘটনার সময় আব্দুল বারিককে অন্য একজনে হাত দিয়ে ২-১টি সজোরে থাপা দেয়।
অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান বলেন, আমি ঘটনায় ছিলাম না, কোনো কিছুই জানি না। তবুও আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।
বর্তমান ইউপি সদস্য আছাদুল হক বলেন, মাহতাব উদ্দিনের নামে খামারখালি জলমহাল ইজারা এনেছে গ্রামের সবার জন্য। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থে মাছ শিকার করতে দখল করে রেখেছে জলমহাল। ওই পক্ষ গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেনের ঘরে আগুন দিয়েছে। আমার উপরও মামলা দিয়েছে। কয়েক বার গণ্যমান্য ব্যক্তি সমস্যা সমাধানের জন্য বসেছেন। কিন্তু কারো সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি।
জগন্নাথপুর থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কামারখাল জলমহাল দখলকে কেন্দ্র তেলিকোনা গ্রামে মারামারি ও অন্যান্য ঘটনায় ৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ