ছাতকে পিডিবি অফিসে ‘মিটার চুরি, দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারি’ তদন্ত শুরু

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টে ২০২১ ০৬:০৯

ছাতক(সুনামগঞ্জ)প্রতি‌নি‌ধি:-  সুনামগঞ্জের ছাতক বিদ্যুৎ অফিস এখন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। গ্রাহক হয়রানী ঘুষ লেন-দেন, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতিতে নিমজ্জিত এ অফিস। পাহাড়সম এসব অভিযোগের প্রতিকার তো দূরে থাক যেন দেখার কেউ নেই। শুধু তাই না, গত ২৯ মে রাতে পিডিবি অফিসের স্টোরে রক্ষিত ৪২টি প্রিপেইড মিটার চুরির সময় চৌকিদারের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল হোসেন। এমন গুরুতর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়ে উঠেন নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার।

এক কথায় ছাতক বিদ্যুৎ অফিসের এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেন ভুক্তভোগী প্রায় ২২ হাজার গ্রাহক। তারা প্রতিকার না পেয়ে আশ্রয় নেন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার। শুরু হয় মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ। পাশাপাশি এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত আবেদন-নিবেদনের মাধ্যমে অনুলিপি প্রদান করে অবহিত করা হয় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, বিদ্যুৎ সচিব ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ গুরুত্বপূর্ণ ঊর্ধ্বতন বিভাগের সকল শাখায়।

ছাতক পিডিবি’র আওতাভুক্ত ২২ হাজার গ্রাহকের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। তখন ঘুম ভাঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। তড়িগড়ি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তদন্ত কমিটি গঠনের। সিলেটের বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী এস এম কবিরকে আহবায়ক করে প্রধান প্রকৌশলী দপ্তর প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন ও বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাককে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

ছাতক পিডিবি’র আওতাধীন ১৫টি গ্রামে বিদ্যুৎ লাইন মেরামতে ২ কোটি টাকা ঘুষ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে তদন্ত কমিটি। গত ২৮ আগস্ট সকাল থেকে শুরু হয় তদন্ত কার্যক্রম। তদন্ত কার্যক্রম শুরু করায় ভুক্তভোগী হাজারো গ্রাহক আশাবাদী ছিলেন একটা সূরাহার। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী গ্রাহকরা সন্দেহের তীর ছুঁড়ে দেন তদন্ত কর্মকর্তাদের দিকে। তারা জানান, দুদফা তদন্তকারী কর্মকর্তারা এলাকার কয়েকজন চিহ্নিত দালাল ও দুর্নীতিবাজদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে।

নোয়ারাই ও দোয়ারা ইউনিয়নের ভুক্তভোগী গ্রাহক ক্ষোভের সাথে বলেন, কাজের কাজ কিছুই হবে না। কারণ তদন্তকারী দল মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।

এদিকে, তদন্তকারী এক কর্মকর্তার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষ লেন-দেনের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত বিষয় তুলে ধরার কোনো সুযোগ নেই বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে, ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার ২২ হাজার ভোক্তভুগী গ্রাহক সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন বিভাগের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ