অবশেষে প্রবাসীর স্ত্রী তাহমিনার ধর্ষণ মামলা : প্রেমিক গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:বুধবার, ১৭ ফেব্রু ২০২১ ০৫:০২

সিলেট অফিস।। অবশেষে প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করলো প্রবাসী কবির মিয়ার আলোচিত স্ত্রী পরকীয়া তাহমিনা। গ্রেফতার করিয়ে প্রেমিককে পাঠিয়ে দিয়েছে শ্রীঘরে। মঙ্গলবার রাতের প্রথম প্রহরে এসএমপির জালালাবাদ থানায় এ মামলা দায়ের করে সে। মামলার পরপরই পুলিশ তার প্রেমিক নূর হোসেনকে গ্রেফতার করে। এ মামলার মধ্যদিয়ে পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়ার কথা অবলীলায় স্বীকার করে নেয় প্রবাসীর স্ত্রী তাহমিনা।
জানা গেছে- সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানার কেমিদপুর (ভুলতা) গ্রামের সৌদী প্রবাসী কবির মিয়ার স্ত্রী দুই সন্তানের জননী তাহমিনা বেগম (২৮)। গত ৯ জানুয়ারি রাতে স্বামীর ঘর থেকে উধাও হয়ে যায় সে। এ সময় স্বামীগৃহ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা, ১৫ভরি স্বর্ণালংকার ও ৩ টি মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগে প্রকাশ।
খোঁজ না পেয়ে তার শাশুড়ি ছফিনা বেগম ১০ জানুয়ারি জালালাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন এবং পরে চুরির অভিযোগে একখানা এজাহারও দাখিল করেন। পরবর্তীতে ঘটে যাওয়া অনেক নাটকীয়তার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি স্বামীর বাড়ি ফিরে গেলে জানতে পেরে যে স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নারী ও শিশু হেফাজতী কেন্দ্রে প্রেরণ করে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি হেফাজতী কেন্দ্র থেকে মুক্তি পেয়ে চলে যায় সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পারকুলস্থ তার বোনের বাড়ি। সেখানে গিয়ে ১৬ ফেব্রয়ারি রাতের প্রথম প্রহরে জালালাবাদ থানায় গিয়ে প্রেমিক নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা {নং-১৬(২)২১} দায়ের করে। মামলায় তাহমিনা তার পিতার নাম ও পিত্রালয়ের ঠিকানা উল্লে করে। স্বামীর বাড়ির কোন উল্লেখ না করে জানায়- সিলেটে সদরের জালালাবাদ থানার ভগতিপুর গ্রামের নূর হোসেনের (২৭) সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে তার সাথে প্রনয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে নূূর হোসেন তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে তার সাথে দেখা করতে বলে। তার কথায় বিশ্বস করে তাহমিনা ১০ ফেব্রুয়ারি জালালাবাদ থানাধীন টুকের বাজারে গিয়ে নূর হেগাসেনের সাখে দেখা করে। পরে নূর হোসেন তাকে টুকের গাঁওয়ের আব্দুল্লাহর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে সাদা কাগজে দস্তখত নিয়ে তাকে বিয়ে করেছে বলে জানায় এবং স্বামী পরিচয়ে তার সাথে বারবার দৈহিক মিলন ঘটায়। পরে তাকে বিভিন্ন স্থানে এবং নিজ বাড়িতে নিয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তার সাথে অনবরত শারিরীক মেলামেশা করে ও প্রতারণামূলক তাকে ধর্ষণ করে। গত ৩১ জানুয়ারি তাহমিনা বিয়ের কাবিন নামা চাইলে নূূর হোসেন বিয়ের কাবিন নামা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং তাকে তার বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এর পরে তাহমিনা কোথায় ছিল মামলায় তা উল্লেখ করেনি। তবে পুলিশ জানিয়েছে যে ১ ফেব্রুয়ারি তাহমিনাকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্টে সেন্টারে পাঠায় পুলিশ। সেখান থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি বোনের জিম্মায় গিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি এ মামলা করে। মামলার পর পুলিশ ধর্ষক ও প্রতারক নূর হোসেনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। গ্রেফতারকৃত নূর হোসেন এসএমপি’র জালালাবাদ থানার ভগতিপুরের তেরাব আলীর পুত্র এবং মামলার বাদী তাহমিনা বেগম সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার রায় সন্তুষপুর গ্রামের মৃত আফতাবুর রহমানের মেয়ে।
এসএমপি’র জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হুদা খান জানান- মামলা দায়ের ও আসামী গ্রেফতারের পরে ভিকটিম তাহমিনাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কোতোয়ালি ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ